Ads

হ্যাঁ, পদ্মা সেতুই দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু


হ্যাঁ, পদ্মা সেতুই দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু


২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে পদ্মা সেতুর নির্মান কাজ শুরু হয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতু দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।     


           Online Earn Dollar  Sign Up করুন




 রাতের পদ্মা সেতু

একনজরে পদ্মা সেতু

এর দৈর্ঘ্যঃ ৬.১৫ কি.মি,এর প্রস্থঃ ১৮.২ মিটার,এর উচ্চতাঃ ৬০ ফুট।

মোট পিলারঃ ৪২ টি,মোট পাইলের সংখ্যাঃ২৬৪ টি,পাইলিং এর গভীরতাঃ ৩৮৩ ফুট।

অবস্থানঃ মুন্সিগঞ্জের লৌহজং ও শরীয়তপুরের জাজিরা।

নির্মাণকাল: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ থেকে ২৫ জুন ২০২২
নির্মাণ ব্যয়: ৩০,১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা
রক্ষণাবেক্ষক: বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ
ওয়েবসাইট: Padma Bridge Official

প্রযুক্তিতে এর  বৈশিষ্ট্য
উপাদান: কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত।
ডিজাইন: দুই স্তর বিশিষ্ট সেতু, উপরের স্তরে সড়ক এবং নিচের স্তরে রেলপথ দিয়ে গঠিত।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য এর প্রাধান্যতা: পদ্মা সেতু  সারা বিশ্বের মধ্যে গভীরতম পাইলের সেতু আর  ভূমিকম্প সহনশীলতা  মাত্রা ৯ রিখটার স্কেল।
 
প্রথম স্থানে রয়েছে ভারতের আসামের ভুপেন হাজারিকা সেতু। এছাড়া ইরাবতী নদীর উপর নির্মিত পাকুক্কু সেতু মিয়ানমারের বৃহত্তম সেতু যার দৈর্ঘ্য পদ্মা সেতুর অর্ধেক। নেপাল,ভুটান, শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানেও নেই এত দীর্ঘ সড়ক ও রেল সেতু।পানি প্রবাহের পরিমাণ ও গতি হিসেবে আমাজন নদীর পর পরই পদ্মা নদীর স্থান।

পাইলিং  কাজ
                                      
পদ্মা সেতুর ৪২ টি পিলার নির্মাণে রেকর্ড ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত পাইলিং করা হয়েছে।পৃথিবীর অন্য কোন সেতু নির্মানে এত গভীর পাইলিং করা হয়নি। এছাড়া পদ্মা সেতুর পাইলগুলো রেকর্ড ৩ মিটার ব্যাসার্ধের । এত বড় ব্যাসের পাইল পৃথিবীর অন্য কোন সেতুতে নেই।

পদ্মা সেতুর আর একটি বিশ্ব রেকর্ড তৈরি হয়েছে বেয়ারিং সক্ষমতায় । কংক্রিটের পিলার এবং স্টীলের তৈরি সেতুর মাঝের পাটাতনে রয়েছে ১০ হাজার টনের ফিক্সন পেন্ডুলাম বেয়ারিং। এত শক্তিশালী বেয়া্রিং পৃথিবীর আর কোন সেতুতে নেই। ফলে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকতে পারবে।


বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে বানিয়েছে এই পদ্মা সেতু । এছাড়া এ সেতুতে একাধারে রয়েছে সড়ক ও রেলপথ। ফলে সেতুর মধ্যে দিয়ে দেশের প্রায় ৪ ভাগের ১ ভাগ অঞ্চল বা দক্ষিণাঞ্চলের পিছিয়ে পরা মানুষের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ নিবিড় হবে। নদীর ওপর পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ কিলোমিটারের অধিক এবং পুরো সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার যা ভারতের সাড়ে ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সমান।


৪ টি বৃহৎ সেতু 

৪ টি বৃহৎ সেতু পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ভুপেন হাজারিকা সেতুর দৈর্ঘ্যের সাথে তুলনাযোগ্য। ভুপেন হাজারিকা সেতু ভারতের দীর্ঘতম সেতু। ইহা আসামের ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা লোহিত নদের উপর নির্মিত। এ সেতুটি আসাম ও অরুনাচল প্রদেশের মধ্যে সংযোগ সেতু হিসেবেও পরিচিত। দেখতে এই সেতুর সাথে পদ্মা সেতুর হুবহু মিল রয়েছে।

প্রতিবেশি  মিয়ানমারের প্রধান নদী ইরাবতীর ওপরও পাকুক্কু নামে একটি সেতু রয়েছে।তবেএর দৈর্ঘ্য পদ্মা সেতুর অর্ধেকের মত।পাকুক্কু সেতুটিতে ৪ কিলোমটার সড়ক পথ ও ৬ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে।

নেপালে পদ্মা সেতুর মত দীর্ঘ সেতু আর নেই। দেশটির কর্নালী নদীর উপর নির্মিত ১ কিলোমিটার দীর্ঘ খতিয়া ঘাট সেতুটি নেপালের দীর্ঘতম সেতু হিসেবে পরিচিত।

পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচিতে দীর্ঘতম সেতুর নাম মালী রিভার ব্রিজ আর এর দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার।

পদ্মা সেতু: দক্ষিণ এশিয়ার নতুন বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দ্বার

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতু কেবল একটি সেতুই নয়—এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই সেতু ঢাকা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে, যা সড়ক, রেল এবং পণ্য পরিবহনকে আগের চেয়ে অনেক দ্রুত এবং সহজ করেছে।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে কেবল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাই উন্নত হয়নি, বরং এটি দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। ভারত, নেপাল এবং ভুটানসহ আশেপাশের দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক আদান-প্রদান সহজতর হওয়ায়, বাংলাদেশ এখন একটি আঞ্চলিক লজিস্টিক হাব হিসেবে গড়ে উঠছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার আন্তঃদেশীয় ব্যবসা-বাণিজ্যে যে গতিশীলতা এসেছে, তা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশাল ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শিল্পায়ন, পর্যটন এবং রপ্তানি খাতে নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট হচ্ছে এই সেতুকে কেন্দ্র করে।

অতএব, পদ্মা সেতু শুধু একটি নির্মাণ প্রকল্প নয়—এটি দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যিক ভুবনে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার প্রতীক।

Post a Comment

0 Comments